ঢাকাশুক্রবার , ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আরো
  6. ইসলামিক
  7. কবিতা
  8. কৃষি সংবাদ
  9. ক্যাম্পাস
  10. খাদ্য ও পুষ্টি
  11. খুলনা
  12. খেলাধুলা
  13. চট্টগ্রাম
  14. ছড়া
  15. জাতীয়
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মুক্ত বাতাসে শহীদদের স্মরণ

সংবাদ ২৪
ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৫ ৬:৪৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

 

নিজস্ব প্রতিবেদক

বছর ধরে জাতীয় দিবস তথা ভাষা শহীদ দিবস, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস মুজিব বন্দনার নিয়ন্ত্রিত ছিল। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবসগুলো মানুষ নিজেদের মতো করেই পালন করতেন। কারণ জাতীয় দিবসগুলোকে এক ব্যক্তির বন্দনা মানুষ মেনে নিতে পারতেন না। ৫ আগস্টের পর পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। এবার দেশের সর্বস্তরের মানুষ মুক্ত পরিবেশে, নিয়ন্ত্রণহীনতায় ভয়মুক্ত চেতনায় ভাষা শহীদদের স্মরণ করেছেন। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানুষের ঢল নেমেছিল। একই ভাবে বাংলা একাডেমির একুশে বই মেলায় দেখা গেছে লাখো মানুষের প্রাণের স্পন্দন। ২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে বইমেলায় উপচে পড়েছিল দর্শনার্থীর ভিড়। এ যেন বন্ধনহীন মুক্ত মানুষের প্রাণের উচ্ছাস।

ফ্যাসিস্ট হাসিনার আওয়ামী লীগের ‘মুজিব বন্দনার বাধ্যবাধকতা মুক্ত’ পরিবেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে। বাংলা ভাষার জন্য যারা প্রাণ দিয়েছেন সেই শহীদদের বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করেছে জাতি। দিবসটিতে হাজারো মানুষ খালি পায়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। শ্রদ্ধার ফুলে ফুলে ভরে যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদি। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ভোর থেকেই প্রভাতফেরি করে সারিবদ্ধভাবে শ্রদ্ধার ফুল দিয়ে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। শহীদ মিনারে ফুল দিতে আসা কয়েকজন জানান, এতোদিন আওয়ামী লীগ জাতীয় দিবসগুলোকে কুক্ষিগত করে ‘মুজিব বন্দনা’র বাধ্যবাধকতা করায় নিজেদের মতো করে দিবসগুলো পালন করেছি। এবার ফ্যাসিস্টমুক্ত গণতান্ত্রিক পরিবেশে ম্ক্তু বাতাসে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়ে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনারে হাজির হয়েছি। বিগত ১৫ বছর শহীদ মিনারে ভয়ভীতি ছিল এখন সেটা নেই।

একুশের প্রথম প্রহরে প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এ সময় অমর একুশের গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ বাজানো হয়। শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে প্রেসিডেন্ট ও প্রধান উপদেষ্টা কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। প্রেসিডেন্ট রাত ১২টা ১ মিনিটে এবং প্রধান উপদেষ্টা ১২টা ১২ মিনিটে শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এর আগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে প্রধান উপদেষ্টাকে অভ্যর্থনা জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. নিয়াজ আহমদ খান। প্রায় দেড় যুগ পর ফ্যাসিস্ট মুক্ত পরিবেশে জাতি ভাষা শহীদের স্মরণ করলো। দিবসটিতে বাংলা একাডেমির বইমেলায় ছিল পাঠক-লেখক-প্রকাশক-ক্রেতা-দর্শকদের উপচেপড়া ভিড়। মুজিব বন্দনা ও আওয়ামী নিয়ন্ত্রণম্ক্তু বইমেলায় ভাষাশহীদ দিবসে যেন উচ্ছাসের মেলা বসেছে। নারী-পুরুষের রঙ-বেরঙের পোশাকে বইমেলায় অন্যরকম এক আবহ তৈরি হয়। বেশিরভাগ পুরুষ পরেন কালো পাঞ্জাবি, নারীরা কালো শাড়ি। বাসন্তি রঙের শাড়ি পড়েও অনেক কিশোরী বইমেলায় হাজির হন। শিশুদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। বইয়ের বেচাবিক্রিও বেড়ে যায়। শিশু প্রহরে ব্যাপক উপস্থিতি ছিল। লিটল ম্যাগ চত্বরে ছিল অনেক ভিড়। বইমেলায় অনেক নারী-শিশুর পোশাক-পরিচ্ছদ ও বিচরণ দেখে মনে হলো তারা যেন মামাবাড়ি-নানাবাড়িতে উৎসব করতে এসেছেন।

জাতীয় শহীদ মিনার কেন্দ্রীক রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি সারাদেশে বিনম্র শ্রদ্ধায় দিবসটি পালিত হয়েছে। বিভাগীয়, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, এমনকি গ্রাম পর্যায়ের শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান স্কুল-কলেজ-মাদরাসা-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-শিক্ষকসহ সর্বস্তরের মানুষ। দিল্লিতে পালিয়ে থাকা শেখ হাসিনা রেজিমে দীর্ঘ দিন সাধারণ মানুষ মুক্ত পরিবেশে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনারে আসতে পারতেন না। জাতীয় দিবসটিতে সবকিছু শেখ মুজিব বন্দনা এবং আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীক করা হতো। আওয়ামী নিয়ন্ত্রণে বাধায় পড়ায় সাধারণ মানুষ মুক্তমনে শহীদদের স্মরণ করতে পারতেন না। এবার হাসিনা পালানোর পর স্বাধীনভাবে আমজনতা শহীদ দিবস পালন করেছে।

দিবসের প্রথম প্রহর রাত ১২টার আগে প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিন শহীদ মিনারে এলে শিক্ষার্থীরা ‘গো ব্যাক গো ব্যাক, চুপ্পু গো ব্যাক’, ‘শেখ হাসিনার খুনিরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘এক দুই তিন চার, চুপ্পু তুই গদি ছাড়’, ‘শহীদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’ ইত্যাদি সেøাগান দেন। কেউ কেউ প্রেসিডেন্টকে ফ্যাসিস্ট হাসিনার দালাল হিসেবে অবিহিত করে ‘ফিরে যাও’, ‘ফিরে যাও’ ‘তোমাকে আমরা চাই না’ চিৎকার করে। রাত সোয়া ১২টার দিকে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সামসুজ্জামান দুদু শহীদ মিনারে প্রবেশ করতে চাইলে নিরাপত্তা জনিত কারণে তাকে বাধা দেয়া হয়। তিনি কিছু সময় পাশে নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় জাসদ ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টিসহ কয়েকটি বাম দলের নেতারা প্রবেশের চেষ্টা করলে প্রেসিডেন্ট ও প্রধান উপদেষ্টার নিরাপত্তারক্ষীরা বাধা দেয়। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। এ সময় তাদের কথাকাটাকাটি করতে দেখা যায়।

 

 

প্রেসিডেন্ট ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদনের পর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগ ও বিচার বিভাগের বিচারপতিরা শ্রদ্ধা জানান। তাদের পরে শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা। এরপর একে একে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্টদূত, কূটনীতিক ও হাইকমিশনাররা, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে অন্যান্য নির্বাচন কমিশনাররা শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর পর্যায়ক্রমে তিন বাহিনীর পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর প্রধানরা। এরপর বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি, ডিএমপি কমিশনার এবং আনসার, বিজিবি, র‌্যাব, এনএসআইর মহাপরিচালকরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে রাত ১২টা ৪০ মিনিটে সর্বস্তরের মানুষের জন্য শহীদ মিনার উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। এ সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও শ্রেণি-পেশার মানুষ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

 

 

আমাদের সাইটে আমরা নিজস্ব সংবাদ তৈরির পাশাপাশি দেশের এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্বনামধন্য সংবাদমাধ্যম থেকে গুরুত্বপূর্ণ খবর সংগ্রহ করে নির্ভুল সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। আমরা সবসময় তথ্যের নির্ভরযোগ্যতা এবং সঠিকতা নিশ্চিত করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করি। তবে, যদি কোনো সংবাদ নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকে, তাহলে আমরা আপনাকে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি সংশ্লিষ্ট সংবাদ মাধ্যম বা নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করার জন্য।

এই সাইটের সব ধরণের সংবাদ, আলোকচিত্র, অডিও এবং ভিডিও কন্টেন্ট কপিরাইট আইন দ্বারা সুরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই কন্টেন্ট ব্যবহারের প্রচেষ্টা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং আইনত শাস্তিযোগ্য। আমরা আমাদের ব্যবহারকারীদের একটি সুরক্ষিত ও তথ্যবহুল অভিজ্ঞতা প্রদানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আমাদের নিউজ সাইটের মাধ্যমে পাওয়া যেকোনো তথ্য ব্যবহারের আগে দয়া করে সেই তথ্যের উৎস যাচাই করতে ভুলবেন না। আপনাদের সমর্থন এবং সহযোগিতা আমাদের এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা। আমাদের সাথেই থাকুন, সর্বশেষ খবর এবং নির্ভরযোগ্য তথ্য পেতে।
%d bloggers like this: